22 Dec 2024, 04:02 pm

ইরানের ৩৫ কোম্পানি ও জাহাজের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন মার্কিন সরকার চাপ প্রয়োগ ও কূটনীতির দ্বিমুখী নীতির আওতায় ঘোষণা করেছে যে তারা ইরানের ৩৫ কোম্পানি ও জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এইসব কোম্পানি ও জাহাজ বিদেশে ইরানের তেল পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় দেশটির অর্থনৈতিক যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ পরিচালনায় কেন্দ্রীয় কমান্ড সেন্টারের ভূমিকা পালন করছে। এই মন্ত্রণালয় গতকাল মঙ্গলবার বলেছে, তাদের এই নিষেধাজ্ঞা ইরানের তেল খাতের ব্যয় বাড়িয়ে দিবে।  ওই মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ইরানের তেল-খাত থেকে অর্জিত আয় দিয়ে দেশটির পরমাণু কর্মসূচির অর্থ যোগান দেয়া হয় এবং এ ছাড়াও ইরানি ড্রোন ও উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কাজের পাশাপাশি নানা দেশে তৎপর ইরানপন্থী সেনাদের অর্থ ও বস্তুগত সহায়তায়ও ব্যবহার করা হয় ইরানি তেল-খাত থেকে আসা অর্থ।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন সরকার ২০১৮ সালে একতরফাভাবে ইরানের সঙ্গে ৬ বড় শক্তি এবং জাতিসংঘের সমন্বয়ে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা থেকে বের হয়ে যায় ও ইরানের ওপর কঠোরতম নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নানা অজুহাত দেখিয়ে জো বাইডেনের সরকারও চাপ প্রয়োগ ও কূটনীতির দ্বিমুখী নীতির আওতায় ইসলামী ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখে।

বাইডেন সরকার এমন সময় এসব পদক্ষেপ নিয়েছে যখন  ইউরোপীয় জোট ও ব্রিটেন ইরানের বিমান ও শিপিং লাইনের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা ঘোষণা করেছে যাতে ইরানের তেল উৎপাদন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পায়। বাইডেন সরকার ইরানের তেল রপ্তানির ওপর নজর রাখছে না বলে ট্রাম্প যে অভিযোগ করেছে ইরান বিরোধী নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তার জবাব দিল বিদায় হতে যাওয়া এই মার্কিন সরকার।

প্রায় ৪৪ বছর ধরে ইরানের তেল খাতসহ নানা খাতের ওপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে মার্কিন সরকার। ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো সর্বোচ্চ পর্যায়ে এনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিল যে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে ইরানের ওপর যাতে ইরানের তেল রপ্তানি শূন্যে নেমে আসে।

নজিরবিহীন ওইসব চাপ সত্ত্বেও ইসলামী ইরান মার্কিন অযৌক্তিক ও অবৈধ দাবিগুলো কখনও মেনে নেয়নি এবং খোদ বাইডেন সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ট্রাম্পের ওইসব চাপ ব্যর্থ হয়েছে। এখন বাইডেনও ট্রাম্পের সেই একই পন্থা অনুসরণ করছে। ইরান ট্রাম্পের ওইসব চাপ উপেক্ষা করে বরং তেল রপ্তানি আগের চেয়েও বাড়াতে সক্ষম হয়েছে এবং মার্কিন কর্মকর্তারাও তা স্বীকার করেছেন।

মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট এক প্রতিবেদনে স্বীকার করেছে যে গত কয়েক বছর ধরে ইরানের সামষ্টিক বা সামগ্রিক অর্থনীতির সূচকগুলোর উন্নতি ঘটছে। জ্বালানি বিষয়ক তথ্য এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের অপরিশোধিত জ্বালানী তেলের দাম ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়ার পর দেশটির প্রতি ব্যারেল জ্বালানী তেলের দাম ২৯ ডলার থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ৮৪ ডলারে ওঠে। জ্বালানী তেলের দামের ওপর মার্কিন সরকারের তেমন নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে জ্বালানী তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাইডেনের নিষেধাজ্ঞাগুলো ব্যর্থ হয় বরং ইরান আগের চেয়েও বেশি লাভবান হয়েছে। অন্য কথায় মার্কিন প্রেসিডেন্টদের ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের জন্য শাপে বর ও মার্কিন সরকারগুলোর জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মনে করা হচ্ছে ট্রাম্প দ্বিতীয় বারের মত মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ায় ইরানের ওপর আবারও সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি আরও ব্যাপক পরিসরে অব্যাহত থাকবে যদিও তার এ ধরনের নীতি প্রথমবারের ক্ষমতার মেয়াদে ব্যর্থ হয়েছিল।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 4389
  • Total Visits: 1408824
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1675

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)
  • ১৯শে জমাদিউস-সানি, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, বিকাল ৪:০২

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
      1
23242526272829
3031     
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018